2023 সালের মে মাসে ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা এবং উন্নয়ন সংস্থা ডিআরডিওর অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা প্রদীপ কুরুকারকে মুম্বাই থেকে গ্রেপতার করে দেশটির অন্ট টেরোরিজম স্কোয়াড খবরটা শুনে অনেকেই আকাশ থেকে পড়েছিলেন ডিআরডিও এমন একটা সংস্থা যারা ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ভারতের সামরিক বাহিনী থেকে শুরু করে পুলিশ কিংবা রিজার্ভ ফোর্স সবারই নানা গোপন তথ্য ডিআরডিওর কাছে আছে এমন একটি সংস্থার এত বড় বিজ্ঞানী যখন এন্টি টেরোরিজম স্কোয়াডের হাতে গ্রেপ্তার হন তখন বিষয়টা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা প্রদীপকে গ্রেপতার করা হয়েছিল প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানের গোয়েন্দাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচারের অভিযোগে আর এই নথি পাকিস্তানের গোয়েন্দারা হাতিয়ে নিয়েছিল সুন্দরী
নারীর টোপ ব্যবহার করে [মিউজিক] নারী লিপসু প্রদীপ নিজের অজান্তেই পা দিয়েছিলেন হানিট্র্যাপের কুখ্যাত জালে হোয়াটস্যাপ এ সুন্দরী নারীর সঙ্গে বন্ধুত্বের বিনিময়ে তিনি শত্রুপক্ষের গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য আপনি যদি এসপিয়নাজ এজেন্সিগুলো সম্পর্কে সামান্য জ্ঞানও রাখেন কিংবা বিশ্বের দেশে দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে জেনে থাকেন তাহলে এই হানিট্র্যাপ শব্দটা আপনার কাছে অপরিচিত হওয়ার কথা নয় প্রদীপের পরিণতিটাও খুব বেশি অবাক করবে না আপনাকে [মিউজিক] হানিট্র্যাপ শব্দটার একটা সুন্দর বাংলা প্রতিশব্দ করা যায় সেটি হলো ভালোবাসার ফাঁত তবে এই ভালোবাসা যে শুধু মানসিক এমনটা করতে দেখা যায় না ক্ষমতাধর কিংবা গুরুত্বপূর্ণ কোন ব্যক্তির কাছ
থেকে গোপন কোন তথ্য বা সেবা আদায়ের উদ্দেশ্যে তাকে কামনার ফাদে ফেলে সেই তথ্য অথবা সেবা আদায় করে নেয়াটাকেই হানিট্র্যাপ বলা হয় হানি ট্রাপে এমন সব ব্যক্তিকেই ফেলা হয় যাদেরকে টাকা দিয়ে কেনা যায় না হুমকি দিয়েও কাজ আদায় করা যায় না তখন একটাই উপায় থাকে কার্যদ্ধারের সেটি হলো মানুষটির পেছনে এক বা একাধিক নারীকে লেলিয়ে দেয়া কামনার ফাঁদে ফেলে তারাই আপনার জন্য আপনার কাঙ্খিত কর্মটি সাধন করে দেবে হানিট্র্যাপে টাকা নয় কামনা আর যৌনতাই প্রাধান্য পায় সবচেয়ে বেশি একদম লেটেস্ট উদাহরণ দিয়ে শুরু করা যাক টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও পাবেল দুরব কিছুদিন আগেই ফ্রান্সে গ্রেপতার হয়েছিলেন রাশিয়ার কাছে এনক্রিপ্ট
করা ডেটা হস্তান্তর করতে অস্বীকার করার পর 2014 সালে রাশিয়া থেকে পালানো দুরব দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর লক্ষ্যবস্তু ছিলেন টেলিগ্রাম এর অসংযমী ব্যবহার এবং এই প্ল্যাটফর্মে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করে বিশ্বজুড়ে মাদক পাচার এবং শিশু নির্যাতনে জড়িত থাকা সহ বিভিন্ন অভিযোগে কিছুদিন আগেই তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ফ্রান্স সরকার আজারবাইজান থেকে ব্যক্তিগত বিমানে ছড়ে ফ্রান্সে অবতরণের পরপরই দুরভকে গ্রেফতার করেছিল ফ্রান্সের পুলিশ সেই বিমানে দুরবের সঙ্গে ছিলেন জুলি ভাবিলোভা নামের এক তরুণী মিডিয়াতে আসা তথ্য অনুযায়ী বেশ কিছুদিন ধরেই বালের সঙ্গে দেখা যাচ্ছিল জুলিকে তাদের দুজনের মধ্যে প্রেম ছিল বলেও দাবি করেছেন অনেকে জুলির ইনস্টাগ্রাম একাউন্টেও দুজনকে
একসাথে দেখা গেছে কিন্তু পাভলের গ্রেফতারের পর জুলি যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছিলেন তিনি কোথায় আছেন কেমন আছেন পাভেলের সঙ্গে তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে কিনা এসবে কিছুই জানা যাচ্ছিল [মিউজিক] না অন্যদিকে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা দাবি করছিলেন জুলির ইন্সগ্রাম পোস্টের কারণেই ফ্রেঞ্চ গোয়েন্দারা পাওয়েলের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পেরেছিলেন [মিউজিক] 24 বছর বয়স্ক জুলি একজন ক্রিপ্টোকারেন্সি স্পেশালিস্ট দুবাইয়ে কাজ করতেন তিনি সেখানেই পাওয়েলের সঙ্গে পরিচয় তার এবং ঘনিষ্ঠতা দুজনে একসঙ্গে বিশ্বের বেশ কিছু দেশে ঘুরে বেরিয়েছে instagram এ সেসব মুহূর্তের ছবিও শেয়ার করেছেন জুলি উজবেকিস্তান বা আজারবাইজানের ছুটি কাটাতে গিয়ে পাভেল এবং জুলির হাস্যুজ্জ্বল মুহূর্তের ছবি এখনো শোভা পাচ্ছে তার Instagram একাউন্টে
[মিউজিক] নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের কেউ কেউ দাবি করেছেন পাওলকে গ্রেফতারের জন্য জুলিকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল তাকে হানি ট্র্যাপ বানানো হয়েছিল পাবেলও সেই ফাঁদে পা দিয়েছেন অথচ পাভলের পরিবার জুলিকে সেভাবে চিনতই না তাদের সঙ্গে জুলির কখনো দেখাও হয়নি যেভাবে তিনি পাবেলকে নিজের প্রেমের জালে ফেলেছেন তাতে করে অনেক সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট বলেছেন যে জুলিকে বেশ কয়েক বছর ধরেই এরকম একটা হাই ভোল্টেজ অ্যাসাইনমেন্টের জন্য তৈরি করা হচ্ছিল কেউ কেউ অবশ্য বলেছেন যে হানিট্র্যাপ নয় বরং অসাবধানতা বসতই এসব পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছিলেন জুরি এতে করে পাওলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এটা বুঝতে পারেননি তিনি কিন্তু তারপরেই প্রশ্ন আসে
তাহলে পাওলের গ্রেফতারের পর কোথায় ভোজবাজির মত মিলিয়ে গেলেন তিনি কারা তাকে অদৃশ্য হয়ে যেতে সাহায্য [মিউজিক] করল পাওল আসলেই হানিট্র্যাপের শিকার হয়েছেন কিনা এটা নিয়ে দ্বিমত আছে অনেকেরই তবে দ্বিমত থাকবে না মরদে চাই ভানুর গল্পটা নিয়ে ইসরাইলের এই নাগরিক সে দেশের একটি নিউক্লিয়ার প্লান্টে কাজ করতেন টেকনিশিয়ান হিসেবে 19 86 সালে তিনি ব্রিটেনে গেলেন বেড়াতে আর গিয়ে প্রখ্যাত ইংরেজি দৈনিক সানডে টাইমস এর অফিসে গিয়ে দাবি করলেন ইসরাইলের কাছে নাকি পারমাণবিক অস্ত্র আছে নিজের দাবির স্বপক্ষেও কিছু যুক্তি দিলেন তিনি চারিদিকে সাড়া পড়ে গেল সানডেস জানতো বানানুর উপর যেকোনো সময় হামলা হতে পারে তাই তারা লন্ডনের একটি সেইফ
হাউজে বানানুর থাকার ব্যবস্থা করল এখানে যে বানানু থাকছেন সেটা যাতে কাক পক্ষীয় না জানে এমন গোপনীয়তা রক্ষা করা হলো পুরো ব্যাপারটায় তবে বানানুর প্রতিপক্ষ যেহেতু মোসাদ তারাও আটঘাট বেঁধেই [মিউজিক] নেমেছিল এদিকে বানানুর তো বন্দি দশা ভালো লাগে না তার আকাশ দেখতে ইচ্ছে করে লন্ডনের বৃষ্টি দেখতে ইচ্ছে করে মাঝেমধ্যেই তিনি কাউকে না জানিয়ে সেফ হাউস থেকে বেরিয়ে পড়তেন নিজের মত করে ঘুরে বেড়াতেন আবার ফিরে আসতেন এভাবে বেড়াতে গিয়েই সিন্ডি নামের এক ইটালিয় নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় তার দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব সেই বন্ধুত্ব গড়ায় প্রেমে কিন্তু আচঙ্কায় সিন্ডি ফানুকে জানায় তার নিজের দেশে ফিরে যেতে হবে লন্ডনে থাকা
আর সম্ভব নয় ফানু সিন্ডিকে জানালেন তিনিও ইতালিতে যেতে চান বাকিটা জীবন সিন্ডির বাহুডোরেই কাটাতে চান তিনি সানডে টাইমস কর্তৃপক্ষকেও ব্যাপারটা জানালেন ফানু তারা আপত্তি করলেও বাধা দিল না নির্ধারিত দিনে লন্ডন থেকে রোমের বিমানে চড়লেন ফানু সিন্ডি তার কয়েকদিন আগেই ইতালি চলে গেছেন রোমে গিয়ে মোসাদের হাতে গ্রেফতার হলেন [মিউজিক] ভেননি মালবাহী জাহাজে করে লুকিয়ে রোম থেকে তাকে নিয়ে আসা হলো তেলাবিবে তারপর করা হলো বিচারের মুখোমুখি এখানে এসেই জানতে পারলেন সিন্ডি নামে আসলে কেউ নেই তার সঙ্গে এতদিন প্রেমের অভিনয় করেছিলেন শেরিল নামের এক মুসাদেন হানিট্রাপের শিকার হয়েছিলেন বেচারা ভারলো তবে হানিট্রাপে যে শুধু নারীকেই মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে
ব্যবহার করা হয় এমনটা কিন্তু নয় পুরুষরা হতে পারেন হানি ট্রাপের হাতিয়ার ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি টেলিগ্রাফের সাংবাদিক জেরেমি অলফ্যান্ডেনের গল্পটা শুনলে সেরকমই মনে হবে 60 এর দশকে তার পোস্টিং ছিল রাশিয়ার মস্কোতে কেজিবির গোয়েন্দারা তাকে দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল জেরেমির যে নারী এবং পুরুষ দুই ধরনের মানুষের প্রতি আসক্তি আছে সেটা তারা জানতেন এ কারণে সুদর্শন এক এজেন্টকে তার পেছনে লাগানো হয় সেই এজেন্টের সঙ্গে সম্পর্ক হয় জেরিমির কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি পৌঁছে যায় কেজিবির কাছে এসব ছবি ফাঁস করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে কেজিবি এজেন্টরা ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে জেরিমিকে তাকে বলা হলো তার কানেকশন কাজে লাগিয়ে ব্রিটিশ
সিক্রেট সার্ভিসের গোপন তথ্য কেজিবির হাতে তুলে দিতে [মিউজিক] হবে জেরিমি অবশ্য সেটা করেননি বরং ব্রিটেনে গিয়ে তিনি ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিস এসআইএস কে সব বলে দিলেন এসআইএস তখন জেরিমিকে প্রস্তাব দিল জেরেমি যাতে ডাবল এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন অর্থাৎ রাশিয়ানরা জানবে জেরিমি তাদের পক্ষে আসলে জেরেমি কাজ করবেন ব্রিটেনের হয়েই কেজিবির গোপন তথ্য এসআইএস কে সরবরাহ করবেন তিনি যদিও ডাবল এজেন্ট হিসেবে জেরিমির ক্যারিয়ার খুব একটা লম্বা হয়নি কারণ রাশিয়ানরাও কখনো তাকে বিশ্বাস করেনি আবার কেজিবি থেকে প্রস্তাব পাওয়ায় এসআইএস এজেন্টরাও তাকে ভালো চোখে দেখতো না হানি ট্যাপের কথা উঠলেই আরেকটা নাম নিতেই হয় নামটা মাতাহারির যার ভালো নাম মার্গারেটা
গেট্রুডাজেল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ডাবল এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি জার্মান সেনাদের সঙ্গেও তার দহরম মহরম ছিল আবার মিত্রবাহিনীর টপ লেভেলের সামরিক কর্মকর্তাদেরও আস্থা হজম ছিলেন তিনি অবশ্য এর অনেক আগে থেকেই ইউরোপের পুরুষরা ছিলেন মাতাহারিতে মুগ্ধ মাতাহারি পেশায় ছিলেন স্ট্রিপ ড্যান্সার সমাজের উপরতলায় ছিল তারা বিচরণ তার প্রেমিকদের মধ্যে ছিলেন মন্ত্রী শিল্পপতি এমনকি উচ্চপদস্থ আর্মি অফিসাররাও প্রথম মহাযুদ্ধ শুরু হবার পর দুই পক্ষের গোয়েন্দারাই বুঝতে পেরেছিলেন মাতাহারিকে গুপ্তচর হিসেবে ব্যবহার করতে পারলে তার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া সম্ভব এ কারণেই জার্মানরা প্রথমেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করে মিত্রবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সামরিক তথ্য এনে দেয়ার বিনিময়ে মোটা টাকার পারিশ্রমিক দেয়ার চুক্তি
হয় তার সঙ্গে অসুস্থ দাম্পত্য সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা দুই সন্তানের ভরণপোষণের জন্য অনেকগুলো বছর সংগ্রাম করা মাতাহারির সামনে বিকল্প হয়তো ছিল না তখন কারণ বিশ্বযুদ্ধের কারণে ইউরোপের ব্যাংকিং সিস্টেম ভেঙে পড়েছিল তার ব্যাংক একাউন্টও ফ্রিজ হয়েছিল সেই সময় এরই মধ্যেই মাতাহারির তৎকালীন প্রেমিক যুদ্ধে আহত হলেন তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন মাতাহারি ফ্রান্সের সামরিক কর্মকর্তারা শর্ত দিলেন প্রেমিকের সঙ্গে মাতাহারি দেখা করতে পারবেন পাশাপাশি তাকে 10 লক্ষ ফেরা দেওয়া হবে কিন্তু বিনিময়ে তাকে ফ্রান্সের হয়ে গুপ্তচর হিসেবে কাজ করতে হবে জার্মান সেনা কর্মকর্তাদের পেটের ভেতর থেকে মূল্যবান তথ্য এনে দিতে হবে নিজের রূপের জাদুতে এক জার্মান অফিশিয়ালকে পটিয়ে মাতাহারি
সেটা এনেও দিলেন কিন্তু তার কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হলো সেই জার্মান কন্সুলার অফিসারের কাছে তার আদেশ অনুযায়ী বার্লিনে একটা গোয়েন্দা বার্তা পাঠানো হলো যেখানে বলা হয়েছিল এজেন্ট এইচটু ওয়ান এর কাছ থেকে ফ্রান্সের সেনাবাহিনীর ব্যাপারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে অবধারিতভাবেই এই রেডিও বার্তাটি ফ্রান্সের হাতে এসে পড়ে বর্ণনার সঙ্গে মিলিয়ে ফরাসি কর্তারা বুঝলেন এইচ2 আসলে আর কেউ নন মাতাহারি [মিউজিক] মিশন শেষ করে ফ্রান্সে ফিরলেন মাতাহারী 10 লাখ ফ্রা বুঝে নেবেন তিনি প্রেমিককে বিয়ে করে দুই সন্তানকে নিয়ে সুখে ঘর বাঁধবেন এমনটাই তার স্বপ্ন কিন্তু পুরস্কার দেয়ার পরিবর্তে উল্টো গ্রেফতার করা হলো তাকে জার্মান রেডিও বার্তা থেকে পাওয়া
তথ্য মিলিয়ে মাতাহারিকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে অভিহিত করা হলো ফ্রান্সের আদালতে মাতাহারিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগই দেয়া হলো না প্রহসনের বিচারে ফাঁসির সাজা দেয়া হলো মাতাহারিকে ফায়ারিং স্কোয়াডে দাঁড় করিয়ে কার্যকর করা হয়েছিল মাতাহারির মৃত্যুদন্ড সেই মৃত্যুর খবরে ফ্রান্সে সেদিন কেউ চোখের জল ফেলেনি বরং বিশ্বাসঘাতকের কঠিন সাজা হয়েছে ভেবে আত্মতৃপ্তিতে ভুগেছে মাতাহারী আসলেই দোষী ছিলেন নাকি ছিলেন পরিস্থিতির শিকার নাকি তাকে ঘিরে রচিত হয়েছিল গভীর এক চক্রান্ত সেটা কেউ তলিয়ে দেখতে যায়নি তখন এমনকি মাতাহারির মৃতদেহটাকে দাফনও করতে এগিয়ে আসেনি কেউ পরে এক মেডিকেল কলেজে দান করে দেয়া হয় মাতাহারির মরদেহ এত এত উদাহরণ শুনলেন বাংলাদেশে হানিট্রাপের একটা ঘটনাও তাহলে
বলি কিছুদিন আগেই কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে খুন হন ঝিনাইদহ চার আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম ওরফে এমপি আনার সেই চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা সাড়া ফেলে দুই বাংলাতেই প্রভাবশালী একজন সংসদ সদস্যকে খুন করে তার দেহ টুকরো টুকরো করে গায়েব করে দেয়া হয়েছে এটা ছিল অবিশ্বাস্য একটা খবর পরে গোয়েন্দাদের তদন্তে বেরিয়ে আসে স্বর্ণচোড়া চালান এবং মাদক ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটেছে এই হত্যাকাণ্ড আর এমপি আনারকে বাঘে আনার জন্য খুনিরা সেলিস্তা নামের এক তরুণীকে ব্যবহার করেছিল সেলিস্তা হানিট্যাপে ফেলেছিলেন আনারকে তার ডাকে সাড়া দিতেই এমপি আনার কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেন এলাকার একটি ফ্ল্যাটে যান সেখানেই তাকে খুন করে খুনিরা
তারপর মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন স্থানে পুতে ফেলে সিলিস্তা নামের যে তরুণী এমপি আনার হত্যায় অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি এর আগেও এস্কট গার্ল হিসেবে কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন যদিও এই খুনের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন তিনি হানি ট্র্যাপ যে শুধু গোয়েন্দা বাহিনীগুলো ব্যবহার করে এমনটি নয় এই মধুচক্রের ফাদ ছড়িয়ে পড়েছে একদম রুট লেভেলেও বাংলাদেশী গণমাধ্যম ঢাকা পোস্টের এক প্রতিবেদনে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন গোটা প্রক্রিয়াটা নিয়ন্ত্রণ করে একটা বড়সড় সিন্ডিকেট এই সিন্ডিকেটের অংশ হিসেবে সুন্দরী তরুণীরা বেশ কয়েকদিন ধরে বৃত্তশালীদের টার্গেট করেন এরপর তাদের সঙ্গে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলেন মদ খান অনেক সময় পৃথক্রমের সময়
কাটান সম্পর্কের দুই তিন সপ্তাহ পার না হতেই তরুণীরা ওই ব্যক্তিকে একসঙ্গে রাত কাটানোর প্রস্তাব দেন রাত কাটানোর জন্য গুলশান ফার্ম গেট মতিঝিল পল্টন ও নবাবপুর এলাকার হোটেলগুলোকে বেছে নেন তারা ওই ব্যক্তিকে নিয়ে তরুণী যখন হোটেলে যান তখনই সেখানে হানা দেন কথিত ডিবি অফিসার সাংবাদিক কিংবা ম্যাজিস্ট্রেট অস্ত্রের মুখে তাদের দিয়ে জোর করে ছবি তোলা হয় ভিডিও ধারণ করা হয় এরপর বারবার সেই ভিডিও দেখিয়ে বিত্তশালী ওই ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেইল করেন চক্রের সদস্যরা সরকারি কর্মকর্তাদের টার্গেট করার কারণ হিসেবে সেই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন প্রতারকদের ধারণা সরকারি কর্মকর্তাদের এ ধরনের কেলেংকারির ঘটনা বাইরে এলে তাদের চাকরি বা সামাজিক সম্মান হারানোর সম্ভাবনা
থাকে চাকরি হারানোর ভয় থেকে তাদের কাছে যা চাওয়া হয় তা তারা দিয়ে দেন এসব ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আসামিীরা পুলিশকে জানান সুন্দরী তরুণীরা পাঁচ তারকা হোটেল বা ক্লাবে গিয়ে উচ্চবিত্তদের সঙ্গে সম্পর্ক করেন হানি ট্র্যাপ একটি প্রতারণামূলক অপরাধ এমনকি অপরাধীদের গ্রেফতারের জন্য কোন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থাও যদি এই পথ অবলম্বন করে তাহলেও এটি ভালো বলার কোন উপায় নেই যতই তার সঙ্গে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব জড়িত থাকুক না কেন এখন গোয়েন্দা সংস্থার চেয়ে বেশি সঙ্গবদ্ধ অপরাধীরাই এমন প্রতারণার ফাঁত পাচ্ছে দেশীয় চক্রের পাশাপাশি ঢাকায় ভারতীয় হানিট্র্যাপ চক্র সক্রিয় আছে যাদের মধ্যে আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কম তারাই এ ধরনের
প্রতারণার শিকার হচ্ছেন বেশি হানিট্র্যাপ আগে এনালগ ছিল যুগ বদলের স্রোতে ভেসে এই অপরাধও এখন ডিজিটাল রূপ নিয়েছে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় এডাল্ট ডেটিং সাইটগুলো হয়ে উঠেছে হানি ট্র্যাপের মুখ্যম জায়গা নাগরিক সচেতনতা না বাড়ানো হলে এ অপরাধ যে ভবিষ্যতে মহামারির রূপ নেবে সে বিষয়ে এখনই সতর্ক করছেন সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্টরা কিন্তু সে প্রস্তুতি আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা সাইবার গোয়েন্দাদের আছে কিনা এটাই এখন বড় প্রশ্ন