চিন্তা করে দেখেন চাকরির বাজারের কতটা খারাপ অবস্থা হলে একটা সময়কে কলিযুগ বা কেয়ামতের আমল বলে চিন্তা করা যেতে পারে দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে বর্তমানে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা 25 লাখ 90 হাজার কিন্তু আমাদের প্রশ্ন বেকারত্ব নিয়ে না লর্ড ক্লাইভ থেকে লুইস মাউন্ট ব্যাটেন মোহাম্মদ আলী জিন্না থেকে আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান 72 এর শেখ মুজিব থেকে 24 এর শেখ হাসিনা কত নেতা কত শাসক এসেছেন কিন্তু কেউ কারো সময়ে লাগাম টানতে পারেননি ক্রমবর্ধমান এই বেকারত্বের আসল সমস্যাটা কোথায় জানেন সমাজের সব সমস্যার সমাধান নিয়ে আমাদের শাসকেরা আসলে ভাবেন না কিছু সমস্যা যদি সমাজে টিকিয়ে রাখা যায় তাতেই বরং তাদের
জন্য ভালো এতে একটা নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য স্বার্থ হাসিল হয় যেই ছেলেটা শুদ্ধ অনার্স বা মাস্টার্স শেষ করেছে সে চাকরি পাওয়ার আগেই এক্সপেরিয়েন্স কোথায় পাবে এটা কি আদৌ সম্ভব পরের নির্বাচনে ভোট দেওয়ার আগে অবশ্যই আপনার পছন্দের প্রতিনিধিকে জিজ্ঞাসা করে নিবেন আপনি আমার ভাত কাপড়ের চিন্তা নিয়ে কতটুকু চিন্তিত বাংলাদেশের বেকারত্বের অবস্থা ঠিক কতটা ভয়াবহ তার একটা গভীর পর্যালোচনায় আমরা অবশ্যই যাব কিন্তু তার আগে আমাকে একটু বলুন তো ঝাড়ু দেওয়ার জন্য যে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর চাকরি আছে তার জন্য কি লেভেলের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন আমি বলে দিচ্ছি উত্তরটা হলো মাস্টার্স ডিগ্রি আমার এই কথার প্রমাণ হলো 18 নভেম্বর 2024 প্রথম
আলোর প্রকাশিত আর্টিকেল কাজের সঙ্গে শিক্ষার সংযোগ বাড়াতে হবে একটু পড়লেই দেখা যায় গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চের মধ্যে রেলওয়েতে দুই ধাপে 2172 ওয়েম্যান নিয়োগ করা হয় ওয়েম্যান হলো 19 তম গ্রেডের চতুর্থ শ্রেণীর একটি চাকরি যাদের মূল কাজ হলো রেলপথ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা সেই চাকরির পরীক্ষায় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ধাপ পেরিয়ে যারা এই পদে চাকরি পেয়েছেন তাদের সবার শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি চাইলেই শুধুমাত্র এই নিউজটা দেখেই আজকের মত ভিডিও এখানেই শেষ করা সম্ভব কিন্তু আমাদের প্রশ্ন বেকারত্ব নিয়ে না প্রশ্ন বেকারত্বের তত্ত্ব তালাশ নিয়ে খুব বেশিদিন আগের না দিন 15 হবে আমি আমার অনার্স জীবনের
শেষ ভাইবা পরীক্ষা দিয়ে বের হলাম একটু ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশ জীবনে প্রথমবারের মতো আমার মাথায় একটা সিরিয়াস প্রশ্ন আসলো সেটা হলো হোয়াট নাউ পড়াশোনা তো শেষ করলাম কিন্তু এখন আমি কি করব এবং এই প্রশ্নটা শুধুমাত্র আমার একার না টার্শিয়ারি লেভেলের পড়াশোনার গন্ডি পেরনো আমার মতো লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত বেকারের প্রশ্ন হলো বেকারত্বের এই সমস্যাটা কি শুধুমাত্র আজকের দিনের নাকি এর পেছনেও আছে বিরাট পলিটিক্যাল ইকোনমি উত্তর খুঁজতে আমাদের ফিরে যেতে হবে আজ থেকে প্রায় 200 বছর আগে বাংলার ঔপনিবেশিক আমলে দেখতে হবে ইংরেজদের নানান রকম আইন কিভাবে এই ভূখণ্ডের মুসলিম সম্প্রদায়কে যুগে যুগে নেগলেক্ট করেছে কিভাবেই বা দেশভাগের পর
সেই পিছিয়ে পড়া মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য চাকরি-বাকরি আর আয় রোজগার হয়ে ওঠে রীতিমত এক চ্যালেঞ্জ দেখতে হবে কিভাবে বাংলাদেশের শহরগুলো গড়ে উঠতে শুরু করল যেখানে চাকরির তাগিদে ছুটে আসতে শুরু করল মানুষ কোয়ালিটিস উইথ ইন সোসাইটিস বিটুইন ওয়ান সোসাইটি এন্ড অনাদার অনুসন্ধান করতে হবে পাকিস্তান আমলে যে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট শিক্ষিত বেকার তৈরি প্রকল্প চালু হয় তা আজও 2024 সালে এসেও কিভাবে বিদ্যমান আমরা আজ খুঁজে দেখার চেষ্টা করব আমাদের এই ভূখণ্ডে বেকারত্বের একেবারে রুট তাই শুরু করছি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের এমন একটা সময় থেকে যেটাকে আমরা বলি বেঙ্গলি রেনেসা এই যেমন রাজা রামমোহন রায় চন্দ্র বিদ্যাসাগর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় যারা রীতিমত
পড়াশোনা করে লায়ক হয়েছেন তাদের সময়ও কি চাকরির বাজার খুব একটা সুবিধার ছিল না 19 শতকের বাঙালি সমাজ সম্পর্কে আমরা যদি একটু বইপত্র ঘাটি তাহলে দেখতে পারবো যে ওই সময় এমন একটা অবস্থা ছিল এমনকি ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট বাগানো ছাত্ররাও সামান্য 10 টাকার চাকরির জন্য রাস্তায় ঘুরে বেড়াতো শিক্ষিত অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করেছে কিন্তু তারপরেও চাকরির জন্য ঘুরে বেড়াতে গিয়ে ক্ষয় হয়েছে জুতার ছাল উঠে গেছে পিঠের চামড়া মেকেলের আশীর্বাদে যিনি আসলে উপমহাদেশের শিক্ষার মাধ্যম প্রসঙ্গে ইংরেজি ভাষার ওকালতি করেছেন এই শিক্ষিত নওজোয়ানরা তাদের মেধা অনুযায়ী কখনোই চাকরি পায়নি যেকোনো অফিস আদালতের বড় বড় মাথাওয়ালা বা উর্ধতন কর্মকর্তার চাকরিগুলো ছিল
সাদা চামড়ার ইংরেজদের জন্যই বরাদ্দ পৃষ্ঠপোষকতা বঞ্চিত পন্ডিত অখ্যাত ভরাটে লেখক ও শিক্ষিত বেকার যুবকেরা সামান্য কেরানীর চাকরি তারপরে স্কুল-কলেজের শিক্ষকতার চাকরি সওদাগড়ী অফিসের চাকরি ছাড়া তাদের সাধারণত খুব একটা ভালো মানের চাকরি জুটতো না ইন্টারেস্টিংলি হিস্টোরিয়ান সুমিত সরকার তার বই রাইটিং সোশ্যাল হিস্ট্রিতে বাংলার চাকরিবাজার নিয়ে একটি মজার তথ্য দিয়েছেন তিনি বলছেন তৎকালীন অর্থনৈতিক অবস্থা মানুষের মনে এমনই বিভীষিকার জন্ম দেয় যে তারা এই সময়টাকে কলিযুগ বলে আখ্যা দিতে থাকেন ইনফ্যাক্ট এই সময় বাংলায় কলিযুগ সাহিত্য নামে এক সাহিত্যিক জনরাও চালু হয়েছিল চিন্তা করে দেখেন চাকরির বাজারের কতটা খারাপ অবস্থা হলে একটা সময়কে কলিযুগ বা কেয়ামতের আমল বলে চিন্তা
করা যেতে পারে কিন্তু এটাই কিন্তু বেকারত্বের চূড়ান্ত উদাহরণ না বাকি আছে আরো অনেক পথ আপাদ হে আজাদ রহে আপ লোগ মুলক পাকিস্তান মেনে ইবাদত মসজিদ সাল 1947 ইংরেজদের টানা বর্ডারে চলছে দেশভাগ প্রক্রিয়া সন্দেহ নেই বেশিরভাগ ভারত উপমহাদেশের অসংখ্য মানুষের জন্য বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছিল নিজ ভূম ত্যাগ করে ঘর আত্মীয়-স্বজন ও যা কিছু আপন সবকিছুকে পেছনে ফেলে উদ্বাস্ত হতে কারই বা ভালো লাগে এমনই ভাগ্য হয়েছিল দেশের লক্ষ লক্ষ হিন্দু ধর্মাবলম্বীর কিন্তু একই সঙ্গে গোটা একটা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য যেন স্বপ্ন পূরণ হলো যেন পাকিস্তান যে পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রকল্প শুরু হয়েছিল মুসলমান কমিউনিটির জন্য আলাদা একটি দেশ কল্পনা করার
ভেতর দিয়ে সে দেশও শেষ পর্যন্ত এই ভূখণ্ডের মানুষের সার্বিক উন্নয়ন করতে পারলো না সার্বিক উন্নয়ন আসলে কত দিক থেকে ব্যাহত হয়েছে তার একটা বড় প্রমাণ হলো ঝাঁকে ঝাঁকে বিশাল সংখ্যক শিক্ষিত বেকার উৎপাদন বলা যায় পাকিস্তান আমলেও সেই ব্রিটিশ কলোনিয়াল পরম্পরায় অব্যাহত থাকলো এবং জিন্নার পাকিস্তান এক্সপেরিমেন্টেও বিশাল সংখ্যক শিক্ষিত বেকার তৈরি হতে থাকলো 1921 সালে বাংলাদেশের একটি মাত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ইউনিভার্সিটি অফ ঢাকা পাকিস্তান আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি আরো চারটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় 1954 সালে রাজশাহী 1961 সালে ময়মনসিংহ কৃষি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফাইনালি 1962 সালে উয়েট যা বর্তমানে বাংলাদেশের বি যোগ করে বুয়েট নামে আত্মবিকাশ
করেছে মনে হতে পারে এই চারটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে পাকিস্তান আমাদের বিশাল উপকার করেছে কিন্তু আসলেই কি তাই খেয়াল করলে দেখবেন পাকিস্তান আমলে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর চারটার মধ্যে তিনটি 60 এর দশকের ভেলাম ভানসেন্দেল তার বই হিস্ট্রি অফ বাংলাদেশে জানাচ্ছেন যে ওই সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিকাম সেন্টারস অফ বোথ কালচারাল ক্রিয়েটিভিটি এন্ড পলিটিক্যাল কন্টেস্টেশন ফর নিউ ব্রিড অফ স্টুডেন্ট অ্যাক্টিভিস্ট দ্যা ড্রিম অফ অ্যান অটোনমাস বেঙ্গল ডেলটা প্রমিস বোথ ইকোনমিক এন্ড কালচারাল ইমান্সিপেশন অর্থাৎ বাঙালি মুসলমান সমাজের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর বিকাশ ও আমরা যাকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ বলি তার বিকাশ ঘটে ঠিক এই সময়ে আমাদের মধ্যে স্বতন্ত্র জাতি হয়ে ওঠার
বাসনাও শুরু হয় ঠিক তখনই যার ফলস্বরূপ আমরা দেখতে পাই 69 এর [মিউজিক] গণঅভ্যুত্থান ওকে থিংস আর গেটিং কমপ্লেক্স আমি আরো সহজে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি যার মধ্যে কথা এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো না হলে এত দ্রুত বাংলাদেশ কখনোই হতো না কিন্তু সেই সময়ে ঢাবি রাবি বাকরি বিয়ে ও বুয়েট মিলে যত গ্রাজুয়েট উৎপাদন করেছে সেই তুলনায় চাকরির বাজারে চাকরি ছিল কি এর উত্তর খুঁজতে আমাদেরকে কয়েকটি ইনসাইটস এর দিকে ভালোভাবে খেয়াল করতে হবে প্রথমত ব্রিটিশ আমলের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা অনুসারে এই ভূখণ্ডের যে হিন্দু সম্প্রদায় ছিল তাদের মাঝে অনেকেই বিরাট জায়গা জমির জমিদার হয়ে উঠেছিলেন দেশভাগের পর যখন এই হিন্দু জমিদারেরা
জায়গা জমি ছেড়ে ভারত চলে যান তখন 1950 এর দশকে পাকিস্তান ইস্ট বেঙ্গল স্টেট একুইজিশন এন্ড টেনেন্সি অ্যাক্ট 1950 নামে একটি আইন প্রণয়ন করে এই আইনের কারণে জমিদারদের ফেলে যাওয়া বিপুল জমি জমা বাঙালি মুসলমানরা ক্লেইম করতে আরম্ভ করে কিন্তু তাতেও এই নতুন ল্যান্ড রাইটস শেষমেষ সামগ্রিক বাঙালি মুসলমানের খুব একটা কাজে আসেনি মধ্য এলিট মুসলমানেরা জমি পেলেও একটা বিরাট অংশের মুসলমান সম্প্রদায় ছিল রীতিমতই বঞ্চিত ফলে কাজের তাগিদে একটা বিশাল জনসংখ্যা ছুটতে থাকে শহরের দিকে দেখা যায় 1947 এর পর ঢাকার জনসংখ্যা তিন গুণ বেড়ে 10 লাখ ছাড়িয়ে যায় 1950 এর দশকে ঢাকা নগর ইনফ্রাস্ট্রাকচারালি বড় একটা পরিবর্তন ফেস
করে সেই সময় পাকিস্তানের যে অর্থনৈতিক দর্শন তাকে আমরা বলতে পারি পিপিপি বা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অর্থাৎ সরকারের তত্ত্বাবধানে প্রাইভেট সেক্টর গুলো বেড়ে উঠতে শুরু করে এই যেমন পাটকল চেনিকল কটন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি চা কারখানা এবং কর্ণফুরি পেপারমিল এই ইন্ডাস্ট্রিগুলো বিকশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকার নগরায়ন শুরু হতে লাগলো আর ঢাকার পাশাপাশি পুরো জনপদ জুড়ে অন্যান্য অনেক অঞ্চল এই সময় ঢাকার মতিঝিলা অফিস ব্লক তেজগাঁওয়ে বিভিন্ন প্রশাসনিক ভবন ও ধানমন্ডিতে এলিট হাউজিং শুরু হয় কিন্তু এত উন্নয়নের পরেও আসল চিত্র ছিল ভিন্ন ভেলাম ভানসেন্দেল জানাচ্ছেন যেখানে পশ্চিম পাকিস্তানে 1950 থেকে 1960 এর দশকে অ্যানুয়াল গ্রোথ 32 থেকে 72% এ গিয়ে
গড়ায় সেখানে পূর্ব পাকিস্তানের সেটা মাত্র 17 থেকে 52% এ থেমে যায় স্পষ্টত চূড়ান্ত এক বৈষম্যের দেখা পাওয়া যায় কাজেই বুঝতেই পারছেন পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ পিছিয়ে ছিল একইভাবে পিছিয়ে ছিল জীবনযাত্রার মান আর চাকরির বাজার চাকরির বাজারের অবস্থা কি পরিমাণ ভয়াবহ ছিল তার একটা শুধুমাত্র একটা উদাহরণ দেই 1966 সালে 1 লক্ষ 14302 জন গভমেন্ট অফিশিয়াল চাকরিজীবীর মাঝে মাত্র 27648 জন ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের বাকি সবাই ছিলেন পশ্চিমের এরকম আরো অসংখ্য উদাহরণ চাইলেই টানা সম্ভব এবং দিনের পর দিন এই বৈষম্যগুলোই যে আমাদেরকে জাতিগতভাবে স্বাধীনতাকামী করে তুলেছিল সেটাও দিনের আলোর মতো সত্য যার একটা বড়
প্রমাণ হলো 1971 এর মুক্তিযুদ্ধ এবং তার ফলে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম কিন্তু প্রশ্ন হলো স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে আর্থনৈতিক বৈষম্য যেমন বারুদ হিসেবে কাজ করেছে 71 পরবর্তী সময়ে আদৌ কিতা একটু হলেও পূরণ হয়েছে লর্ড ক্লাইভ থেকে লুইস মাউন্ট ব্যাটেন মোহাম্মদ আলী জিন্না থেকে আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান 72 এর শেখ মুজিব থেকে 24 এর শেখ হাসিনা কত নেতা কত শাসক এসেছেন কিন্তু কেউ কারো সময়ে লাগাম টানতে পারেননি ক্রমবর্ধমান এই বেকারত্বের সবাই শাসন করেছেন ঠিকই রাজনৈতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে বড় বড় বক্তব্য রেখেছেন ঠিকই দালানের উপর দালান ব্রিজ কালভার্ট ইকোনমি নিয়ে বিশাল বিশাল উন্নয়নমূলক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন ঠিকই কিন্তু বেকারত্বের দিকে
সবাই ছিলেন উদাসীন আমরা যদি ধরে নেই মানুষের উন্নয়নের আলাপাশে পেটের চাহিদা শেষ হওয়ার পর তাহলে বলতেই হয় যে আমাদের নেতৃবৃন্দ এই সামান্য বেসিক ব্যাপারটাই যুগের পর যুগ আলোচনার বাইরে রেখেছেন ফলাফল কয়েকশো বছর ধরে চলতে থাকা এই বেকারত্ব সমস্যার কোনরকম সমাধান তো হয়নি বরং ভবিষ্যতে তা আরো বিরূপ ভয়াবহ এবং চূড়ান্ত আকার নেয় প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুসারে ব্রিটিশ কাউন্সিলের গবেষণা থেকে জানা যায় দেশের 42 শতাংশ তরুণ বেকারত্ব নিয়ে চিন্তিত চিন্তা করতে পারেন 42% গোটা একটা প্রজন্মের প্রায় অর্ধেক শুধু তাই না 2017 সালে যেখানে শিক্ষিত বেকার ছিল 4 লক্ষ 2022 সালে সেটা ডাবল হয়ে 8 লক্ষ মাত্র পাঁচ
বছরের ব্যবধানে দ্বিগুণ এমনকি চাকরির বাজারের সোনার হরিণ বিসিএস এ প্রতিটি আসনের বিপরীতে লড়ছে 200 জন চাকরি প্রত্যাশী আমাদের শাসকেরা কি কখনো কোনদিন ভেবেছেন যে একজন না হয় চাকরি পেয়েই গেল কিন্তু বাকি 199 জনের কি হবে তাদের কি পরিবার নেই অর্থনৈতিক দৈন্য বা সেখান থেকে বের হয়ে আসার জন্য স্বপ্ন নেই অবশ্যই আছে কিন্তু আসল সমস্যাটা কোথায় জানেন সমাজের সব সমস্যার সমাধান নিয়ে আমাদের শাসকেরা আসলে ভাবেন না কিছু সমস্যা যদি সমাজে টিকিয়ে রাখা যায় তাতেই বরং তাদের জন্য ভালো এতে একটা নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য স্বার্থ হাসিল হয় কিন্তু ঝামেলা এখানেই শেষ না মনে হতেই পারে যে নেতাদের যদি
দিন-রাত গালমন্দ করা যায় তাহলে হয়তো সব সমস্যার সমাধান সম্ভব কিন্তু সমস্যাটা আরো অনেক বেশি জটিল সরষের ভূতটা আসলে অন্য কোনখানে এটা আমরা সবাই জানি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশিত চাকরির নাম বিসিএস বা অন্য যেকোনো সরকারি চাকরি আচ্ছা একটু ভেবে দেখুন তো কেন সরকারি চাকরির দিকেই বাংলাদেশের মানুষ এত বেশি ঝোঁকে কেনই বা ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করে বের হওয়া ছাত্রটিও ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার জন্য 200 আসনের বিপরীতে লড়াই করে মূলত সরকারি চাকরিতে তুলনামূলক বিশাল স্যালারির সুযোগ নেই তাহলে কি এমন আছে এই সোনার হরিণে সরকারি চাকরিতে আসলে যা আছে তা হলো সেন্স অফ সিকিউরিটি যেটা আসলে অন্য কোন চাকরিতে খুঁজে
পাওয়া মুশকিল ধরুন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা একটা ছেলে ম্যাজিস্ট্রেট কেন হতে চায় কারণ তার সেক্টরে যথেষ্ট ভ্যাকেন্সি নেই এমনকি যথেষ্ট চাকরিও দেশে বরাদ্দ নেই থাকলেও সেখানে সেন্স অফ সিকিউরিটি নেই ফলে সে যখন ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তখন তার কাছে সরকারি চাকরি হয়ে ওঠে আকর্ষণীয় কিন্তু এমন তো হওয়ার কথা ছিল না ফিল্ড যেহেতু আছে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো যেহেতু হচ্ছে তাহলে সেই পরিমাণ চাকরিও বাজারে থাকার কথা ছিল অথচ বাংলাদেশ রাষ্ট্র এই জনমিতি আমলে না নিয়েই দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেহিসাভাবে একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছে এ এক রকম সাবজেক্ট আর ডিসিপ্লিন তৈরি করেছে কিন্তু সেই হিসেবে চাকরির বাজারকে প্রস্তুত করেনি
একটুও সরকারি চাকরির মতো অন্যান্য সকল সেক্টরকে সিকিউর করে তোলেনি যেটা বাংলাদেশ রাষ্ট্রেরই ব্যর্থতা এখন শুধু ইঞ্জিনিয়ারিং না বাকি সমস্ত সাবজেক্ট আর ডিসিপ্লিনের হিসাবটা মিলিয়ে দেখুন একই দাঁড়াবে যাই হোক সমস্ত সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে এ পর্যায়ে কয়েকটি সমাধান যুক্ত করতে চাই যার প্রথমেই হলো সরকারি খাতে দুর্নীতি কমানো বিশেষ করে মামা চাচা খালুর সুপারিশে বা রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে চাকরি না দিয়ে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির সুযোগ করে দিতে হবে এছাড়াও বিসিএস সহ সরকারি চাকরির যে প্রশ্ন ফাঁস কেলেংকারী তার যেন আর কখনোই পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকেই কঠোর নজর নজরদারী প্রয়োজন দুই বেসরকারি খাতকে প্রসারিত করা এটা আমরা সবাই জানি যে বাংলাদেশের
শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর চাহিদা অনুযায়ী বা প্রত্যাশা অনুযায়ী সেই পরিমাণ বেসরকারি খাতের চাকরি কিন্তু আপাতত নেই যাও বা আছে তারও একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যা বিদেশীদের দখলে যেটা নিয়ে রাষ্ট্রের উচিত আরো গভীরভাবে পর্যালোচনা করা দেশের মানুষের জন্য চাকরির সুযোগ বৃদ্ধি করা বেসরকারি খাতের আরো একটা বড় সমস্যা হলো এক্সপেরিয়েন্স ছাড়া চাকরি পাওয়া মুশকিল এখন আমাকে একটা কথা বলেন তো যেই ছেলেটা শুদ্ধ অনা বা মাস্টার্স শেষ করেছে সে চাকরি পাওয়ার আগেই এক্সপেরিয়েন্স কোথায় পাবে এটা কি আদৌ সম্ভব না সম্ভব না চাকরি পাওয়ার আগে তো এক্সপেরিয়েন্স গ্যাদার করা সম্ভব না কিন্তু এই সমস্যারও আমরা একটা সমাধান দাঁড় করাতে চাই বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত
রাষ্ট্রে ইউনিভার্সিটিতে পড়া অবস্থাতেই শিক্ষার্থীরা পার্টটাইম চাকরি করে কিছু ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় নিজেই সেই সুযোগ করে দেয় যেটা তার ফাইনান্সিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্স এর পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রের এক্সপেরিয়েন্স অর্জনেও বিরাট ভূমিকা রাখে যা গ্রাজুয়েশন শেষ করার পর চাকরি পেতে সুবিধা বয়ে আনে আমাদের দেশের ইউনিভার্সিটি গুলোরও উচিত এরকম শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো না হলে এত এত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কখনোই লাভ নেই যারা রীতিমত প্রতিবছর শিক্ষিত বেকার উৎপাদন করে নাম্বার তিন আমি মনে করি যেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো শুধুমাত্র চাকরির পিছনে না ছুটে নিজে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করা এবং এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের উচিত পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শেষে একটা কথা যুক্ত করতে চাই ব্রিটিশ
শাসনামল থেকে শুরু করে দেশভাগের পর পাকিস্তান হয়ে মুজিব থেকে শুরু করে একের পর এক শাসকের শাসনামল ঠিকই গেছে বেকারত্ব সমাধান একটুও হয়নি বরং বেড়েছে পরের নির্বাচনে ভোট দেওয়ার আগে অবশ্যই আপনার পছন্দের প্রতিনিধিকে জিজ্ঞাসা করে নিবেন আপনি আমার ভাত কাপড়ের চিন্তা নিয়ে কতটুকু চিন্তিত [মিউজিক]