সেভেন সিস্টারস চাবাগানের সুভাস মেঘে ঢাকা পাহাড় আর শান্তিপূর্ণ গ্রাম কিন্তু এই অঞ্চল এখন টালমাটাল বিদ্রোহীদের পতাকা উঠছে নাগাল্যান্ডের পাহাড়ে মিজোরামের গ্রামে কানাঘোষা চলছে স্বাধীনতার পশ্চিমা শক্তির চক্রান্তে গড়ে উঠতে যাচ্ছে একটা নতুন দেশ যার নাম দেওয়া হচ্ছে জোগাম আজ সেভেন সিস্টারের মানুষেরা নিজেরাই বলছে আমরা আর ভারতের সঙ্গে থাকতে চাই না আর স্বাভাবিকভাবেই চীন যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের মত দানবীয় শক্তি সেই আগুনে ঘি ঢালছে বিশেষজ্ঞদের মতে খুব শীঘ্রই সেভেন সিস্টার ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা হতে চলেছে তাই এখন অনেকেই প্রশ্ন তুলেছে উত্তর-পূর্ব ভারতের চিকেন নেকের গলা চেপে ধরার খেলায় ভারতের পতন কি সুনিশ্চিত সাত বোনের সংসার ভেঙে গিয়ে
সেভেন সিস্টার কি নতুন একটা খ্রিস্টান রাষ্ট্রে পরিণত হতে চলেছে যে রাষ্ট্র কিনা মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোড়া ইসরাইলের মত পশ্চিমাদের সহযোগী রাষ্ট্র হিসেবে কাজ করবে আর এসব কিছু জানতেই দেখতে থাকুন মায়াজালের আজকের বিশ্লেষণ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টারের এই সাতটা রাজ্য হল আসাম ত্রিপুরা মেঘালয় অরুণাচল প্রদেশ নাগাল্যান্ড মণিপুর মিজোরাম যা শুধু ভারতের মানচিত্রের একটা অঞ্চল নয় বলা যায় এটা এক জীবন্ত সংস্কৃতি এখানকার মানুষের ধর্ম ভাষা পোশাক সংস্কৃতি এবং খাদ্যাভ্যাস সবকিছুই ভারতের মূল ভূখণ্ডের চেয়ে একেবারেই আলাদা যেমন আসাম হলো চায়ের দেশ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা এই রাজ্য চা উৎপাদনে বিশ্ববিখ্যাত কিন্তু এখানেই রয়েছে ইউএল এর মত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আস্তানা মিজোরাম
যাকে বলা হয় শান্তিপূর্ণ পাহাড়ের ভূমি আর আজ সেই পাহাড়েই স্বাধীনতার স্বপ্নে মত্ত জনগণ নাগাল্যান্ডে হর্নবিল উৎসব হলেও তার আড়ালে চলছে ভারত থেকে আলাদা হওয়ার জোরালো আন্দোলন মেঘালয় যা মেঘের রাজ্য নামে পরিচিত যারা কিনা এখন নতুন করে নিজেদের পরিচয়ের খোঁজ করছে মণিপুরে পিএল এর মত বিদ্রোহী গোষ্ঠী ভারত থেকে আলাদা হয়ে নতুন রাষ্ট্র গড়ারও স্বপ্ন দেখাচ্ছে এই সাতটা রাজ্য যেন সাতটা আলাদা আলাদা সভ্যতা তারা নিজেদেরকে ভারতের অংশ মনে করে না আর এই বিভাজনই আজ বিদ্রোহের জন্ম দিয়েছে আর এই বিদ্রোহের আগুনে নতুন করে ঘি ঢালছে ভারতের বন্ধু আমেরিকাসহ বেশ কিছু পশ্চিমা দেশ যেন তারা দক্ষিণ এশিয়ায় একটা খ্রিস্টান
রাষ্ট্র গঠন করে নিজেদের স্বার্থ নিশ্চিত করতে পারে সেভেন সিস্টারকে খ্রিস্টান রাষ্ট্রে পরিণত করার এই চক্রান্ত শুরু হয়েছিল সেই ব্রিটিশ শাসনের আমল থেকেই সেজন্যই উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রতি ইংরেজদের ছিল এক বিশেষ নজর ব্রিটিশরা এখানে চা কাঠ এবং খনিজ সম্পদের প্রাচুর্য দেখে এই অঞ্চলকে নিজেদের শাসনের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বানায় কিন্তু তার সঙ্গে তারা আরো একটা কাজ করে খ্রিস্টান ধর্মের প্রসার ব্রিটিশ মিশনারিরা এই অঞ্চলে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সেবার নামে খ্রিস্টান ধর্মের প্রচার শুরু করে ব্রিটিশরা সেই সময় থেকেই এই অঞ্চলের মানুষদেরকে ভারত থেকে আলাদা করতে চেয়েছিল আর ব্রিটিশদের সেই চক্রান্তের কারণেই 1947 সালে যখন ভারত স্বাধীন হয় তখন সেভেন সিস্টারের মানুষেরা
মনে করতো তারা প্রকৃতপক্ষে ভারতের অংশ নয় তাছাড়া স্বাধীনতার পর ভারত সরকার এই অঞ্চলের তেমন কোন উন্নতিও করেনি এখানকার মানুষদের অনেকেই মনে করে তারা ভারতের মূল ভূখণ্ডের দ্বারা অবহেলিত আর সেই অবহেলাই আজ তাদের মধ্যে বিদ্রোহের বীজ বুনেছে আর সেজন্যই আজ সেভেন সিস্টারের মানুষরাই ভারতের থেকে আলাদা হওয়ার জন্য আন্দোলন করছে যেমন নাগাল্যান্ডে এনএসসিএন নামে একটা আলাদা রাষ্ট্র নাগালিম গড়ারও দাবি তুলেছে তাদের দাবি নাগাল্যান্ড আসাম এবং মণিপুর প্রদেশের কিছু অংশ নিয়ে একটা স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হবে মিজোরামের মানুষও স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখছে তারা মনে করে ভারতের সরকার তাদের উন্নয়ন নিয়ে কখনোই ভাবেনি মেঘালয় এবং ত্রিপুরার মানুষজন মনে করে তাদের ভাষা
এবং সংস্কৃতি ভারতের মূলধারায় হারিয়ে যাচ্ছে ভারতের জন্য আরো বেশি দুশ্চিন্তার কারণ হলো এই বিদ্রোহ এখন শুধু স্থানীয় পর্যায়ে আর সীমাবদ্ধ নেই এটা এখন আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর বড় একটা চক্রান্তের কেন্দ্রীয় স্থল হিসেবেও পরিণত হয়েছে সেভেন সিস্টারসের এই বিদ্রোহ ভারতের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে যেমন পশ্চিমা শক্তি বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র সেভেন সিস্টারের এই বিদ্রোহকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে তাদের পরিকল্পনা হলো ভারতের এই অঞ্চল ভেঙে একটা খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠন করা সম্প্রতি মিজোরামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বলেছেন মিজোরাম নাগাল্যান্ড এবং মণিপুরকে একত্র করে একটা নতুন রাষ্ট্র গঠন করা উচিত এই রাষ্ট্র একটা খ্রিস্টান রাষ্ট্র হবে যা পশ্চিমাদের জন্য দক্ষিণ
এশিয়ার ইসরাইলের মতই মিত্র হিসেবে কাজ করবে তাছাড়া সেভেন সিস্টারস কে ভেঙে নতুন রাষ্ট্র গড়তে শুধুমাত্র পশ্চিমারাই চক্রান্ত করছে না বরং সেভেন সিস্টারসকে ভেঙে নতুন রাষ্ট্র গঠনের জন্য চীন অনেক আগে থেকেই কাজ করে আসছে চীন অনেক আগে থেকেই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে বিদ্রোহীদেরকে নানাভাবে উসকে দিয়েছে এবং এখনো দিচ্ছে তারা সরাসরি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে অর্থ এবং অস্ত্র দিচ্ছে ভারতের জন্য আরো ভয়াবহ খবর হলো অরুণাচল প্রদেশকে চীন দক্ষিণ তিব্বত বলেও দাবি করছে চীন জানে যদি চিকেন নেক করিডর বন্ধ করে দেওয়া হয় তবে সেভেন সিস্টারস এর সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ একদম বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে সত্যি বলতে তাদের এই পরিকল্পনা
শুধু ভারতের জন্য না বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়ার ভুল রাজনীতির জন্য হুমকিস্বরূপ কি ভাবছেন এখানেই শেষ না সেভেন সিস্টারস নিয়ে পাকিস্তানও ভারতের সঙ্গে লড়াই না করে বিশাল এক পরিকল্পনার মাধ্যমে সেভেন সিস্টারস কে ভাঙতে চলেছে তারা উত্তর-পূর্ব ভারতের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে সাহায্য করে পাকিস্তানের আইএসআই এই অঞ্চলের বিদ্রোহীদেরকে অস্ত্র সরবরাহ করে এখানে পাকিস্তানের উদ্দেশ্য খুবই পরিষ্কার ভারতের ভেতরে অস্থিরতা সৃষ্টি করা তারা চায় ভারত নিজেদের সমস্যার মধ্যেই ব্যস্ত থাকুক এবং এই সুযোগে তারা কাশ্মীরের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করবে সত্যি বলতে চিকেন নেক করিডোর এখন ভারতের জন্য সবচাইতে বড় দুর্বলতা যেন গলার কাটায় পরিণত হয়েছে এই করিডোর যদি একবার বন্ধ হয়ে যায়
তাহলে সেভেন সিস্টারস ভারতের কাছ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে আর চীন পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্র এই করিডোর দখল করে নিতে চাইছে সেই সাথে সেভেন সিস্টারসও আজ ভারতের অংশ হিসেবে থাকার স্বপ্ন দেখছে না তারা নিজেদের জন্য নতুন ভবিষ্যৎ গড়ার কথা ভাবছে পশ্চিমাশক্তি এবং চীন এই বিদ্রোহকে কাজে লাগিয়ে এক নতুন রাষ্ট্র গঠন করার পথে এগোচ্ছে ভারতের জন্য এটা শুধু একটা অঞ্চল হারানোর বিষয় না বরং এটা তাদের অস্তিত্বের উপরে আঘাত তবে এখানে ভারতও একেবারে বসে নেই তারা এখন সেভেন সিস্টারস এর সাথে নতুনভাবে যোগাযোগ রক্ষার জন্য নানা রকম উপায় বেছে নিচ্ছে সেভেন সিস্টারের জন্য তৈরি করছে প্রশস্ত রাস্তা এবং সেখানে
মোতায়ন করে রেখেছে হাজার হাজার সৈন্য তবে সাত বোনের এই সংসার আসলেই ভেঙে যাবে নাকি টিকে থাকবে তা দেখতে হলে আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছু ছোটা দিন