এই দ্বিমাত্রিক বৃত্তের কেন্দ্র কোথায় উত্তর খুবই সহজ এখানে এবার দ্বিমাত্রিক বৃত্তের পরিবর্তে ত্রিমাত্রিক গোলক যেমন পৃথিবীর কেন্দ্র কোথায় উত্তর পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে 6371 কিলোমিটার গভীরে কেন্দ্র ধারণাটি জ্যামিতিক দিক থেকে তো অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ সেই সাথে মানুষের মনস্তত্বেও কেন্দ্র ধারণাটি যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে মানুষ সবসময় নিজেকে বিশেষ মনে করতে চায় যার ফলে সে নিজেকে সবকিছুর কেন্দ্রে রাখতে চায় যেমন বন্ধু-বান্ধবদের আড্ডায় আপনি নিজেকে মনোযোগের কেন্দ্রে রাখতে চান একজন সেলিব্রেটি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেকে আলোচনার কেন্দ্রে রাখতে চায় একজন স্বৈরাচার নিজেকে রাষ্ট্র ক্ষমতার কেন্দ্রে পরিণত করতে চায় আবার বড় স্কেলে চিন্তা করলে পৃথিবীকে মানুষ অন্য সকল মহাজাগতিক বস্তুর কেন্দ্রে রাখতে
চায় এখন প্রশ্ন হলো কেন্দ্র ধারণাটি আসলে কি কেন্দ্র হচ্ছে এমন বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ একটি স্থান যেই বৈশিষ্ট্য অন্য স্থানের ক্ষেত্রে থাকে না যেমন বৃত্তের কেন্দ্র হচ্ছে এমন একটি পয়েন্ট যেখান থেকে বৃত্তের অন্য সকল পয়েন্ট গুলোর দূরত্ব সমান থাকবে এবং এই বৈশিষ্ট্যটি একমাত্র রয়েছে আবার কেন্দ্র হচ্ছে এমন স্থান যেখান থেকে সূচনা বা শুরু বলা যায় যেমন পানিতে একটি ঢেউ তৈরি হলে সেই ঢেউ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এখন যদি বলা হয় এই ঢেউ এর শুরু বা সূচনা কোথায় উত্তর হবে কেন্দ্র এসব কারণে কেন্দ্র ধারণাটিকে মানুষ বিশেষভাবে বিবেচনা করে যার ফলশ্রুতিতে আমরা বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে অর্থাৎ মহাবিশ্বের কেন্দ্র কোথায় তা
জানতে চাই আজকের ভিডিওতে মূলত এই মহাবিশ্বের কেন্দ্র নিয়ে কথা বলব আমি জুম্মান আছি আপনাদের সাথে আপনারা দেখছেন বিজ্ঞান পাইসি মহাবিশ্বের কেন্দ্র কোথায় এই প্রশ্নের উত্তর মানুষ বহুকাল ধরে খুঁজেছে খ্রিস্টের 300 বছর পূর্বে অ্যারিস্টোটল প্রথম ধারণা দিয়েছিলেন পৃথিবী হচ্ছে মহাবিশ্বের কেন্দ্র সেই সময় খালি চোখে আকাশে যে মহাজাগতিক বস্তু দেখা যেত যেমন চাঁদ সূর্য কিংবা স্টার এরা পৃথিবীর সাপেক্ষে যেহেতু তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতো এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান হতো ফলে তখন মনে করা হয়েছিল পৃথিবী হচ্ছে মহাবিশ্বের কেন্দ্র এবং আকাশের সকল মহাজাগতিক বস্তু পৃথিবীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় যাকে বলা হয় জিওসেন্ট্রিক মডেল এই
জিওসেন্ট্রিক মডেল বহুদিন পৃথিবীতে টিকেছিল পরবর্তীতে বহু মানুষের গভীর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের কেন্দ্র সম্পৃক্ত ধারণাতে পরিবর্তন আসতে শুরু করে 1543 সালে নিকোলাস কোপারনিকাস সূর্যকে মহাবিশ্বের কেন্দ্র বলে দাবি করেন এবং পৃথিবীসহ অন্য সকল গ্রহ সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে বলে প্রস্তাব করেন যাকে বলা হয় হেলিওসেন্ট্রিক মডেল পরবর্তীতে গ্যালিলিও আবিষ্কার করেন জুপিটার গ্রহের উপগ্রহগুলো সূর্যের পরিবর্তে জুপিটারকে কেন্দ্র করে ঘুরছে যার মাধ্যমে সূর্য মহাবিশ্বের কেন্দ্র থেকে সরে গেল এইভাবে বোঝা গেল যে আমরা অর্থাৎ পৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্র নয় এর মধ্যে 1580 এর দশকে জর্দান ব্রুনো সর্বপ্রথম প্রস্তাব করেন যে আকাশে থাকা প্রত্যেকটি তারার চারপাশে পৃথিবীর মত গ্রহ বা এক্সোপ্লানেট রয়েছে এবং ওই
গ্রহগুলোতে নিজস্ব প্রাণীও থাকতে পারে সেই সাথে মহাবিশ্ব হতে পারে অসীম ব্রুনোর এই ধারণা ওই সময়ের প্রচলিত ধর্মীয় মতবাদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এই অভিযোগ এনে সাত বছর বিচার কাজ চালিয়ে তাকে ধর্মদ্রোহী রায় দেয়া হয় এবং 1600 সালের 17ই ফেব্রুয়ারি তাকে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় অথচ আজকে আমরা জানি প্রত্যেকটি তারারই নিজস্ব গ্রহ রয়েছে সেই গ্রহের সংখ্যা এক বা একাধিক হতে পারে সেই সাথে সেই গ্রহগুলোর মধ্যে যেগুলো হ্যাবিটেবল জোনে রয়েছে সেগুলোতে প্রাণ থাকারও সম্ভাবনা রয়েছে সেই সাথে মহাবিশ্ব অসীম হবার সম্ভাবনাই বেশি যাই হোক গ্যালিলিওর পরবর্তী সময়ে টেলিস্কোপের উন্নতির সাথে সাথে মহাবিশ্ব সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধ হতে
থাকে আমরা জানতে পারি আমাদের সূর্য বিশেষ কিছু নয় বরং মিল্কিও গ্যালাক্সি থাকা 100 বিলিয়ন বা 10000 কোটি তারার মধ্যের একটি মাত্র তারা অর্থাৎ শুধুমাত্র মিল্কিও গ্যালাক্সিতেই আমাদের সূর্যের মত আরো 10000 কোটি সূর্য রয়েছে এরপর জানা গেল মিল্কিয়ে গ্যালাক্সির মত আরো প্রায় দুই ট্রিলিয়ন বা দুই লক্ষ কোটি গ্যালাক্সি আমাদের অবজারভেবল ইউনিভার্সের মধ্যে রয়েছে এবং অবজারভেবল ইউনিভার্সের বাইরে এই সংখ্যাটি হতে পারে অসীম তার মানে মহাবিশ্ব যে কতটা বিশাল তা অনুধাবন করাই মানব মস্তিষ্কের জন্য কঠিন এখন প্রশ্ন হচ্ছে এত বিশাল মহাবিশ্বের কেন্দ্র কোথায় এই এই প্রশ্নের উত্তর তিনটি দিক বিবেচনায় দেয়া যেতে পারে প্রথমত অবজারভেবল ইউনিভার্স দ্বিতীয়ত বিগ
ব্যাং এবং তৃতীয়ত মহাবিশ্বের স্ট্রাকচার কোন বস্তু থেকে আলো আমাদের চোখে আসলে ওই বস্তু আমরা দেখতে পাই তবে আলো কিন্তু দূরত্ব অতিক্রম করার সময় স্পেসের প্রসারণের ফলে দুর্বল হতে থাকে এখন এই বিষয়টি নিয়ে কনফিউশন তৈরি হতে পারে যেমন পৃথিবীতে একটি মোমবাতির আলো জ্বালালে চাঁদ থেকে সেই আলো দেখা যায় না কিন্তু পৃথিবী থেকে শক্তিশালী লেজারের আলো চাঁদে ফেললে সেই আলো আবার দেখা যায় এখন প্রশ্ন হচ্ছে এমনটা কেন মোমবাতি থেকে নির্গত আলো বা ফোটন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ফলে দূরত্ব বাড়ার সাথে সাথে স্পেসে মোমবাতি থেকে নির্গত ফোটনের ঘনত্ব কমতে থাকে যার ফলে মোমবাতির আলো থেকে নির্গত ফোটন চাঁদ পর্যন্ত
যেতে যেতে ফোটনের ঘনত্ব এতটাই কমে যাবে যার ফলে চাঁদ থেকে মোমবাতির আলো দেখা যাবে না অন্যদিকে লেজার যেহেতু চারদিকে না ছড়িয়ে সরল পথে একটি নির্দিষ্ট দিকে চলতে থাকে ফলে দূরত্ব অতিক্রম করার সাথে সাথে কিন্তু লেজার থেকে নির্গত ফোটনের ঘনত্ব কমে না ফলে লেজারের আলো চাঁদ থেকে দেখা যায় এখন এই দুইটি উদাহরণের ক্ষেত্রে আরো অনেক বিষয় রয়েছে তবে এতটা ডিটেইলসে যাচ্ছি না এখন লেজারের আলো সরল পথে চলে বলে লেজারের আলোতে থাকা ফোটনের ঘনত্ব কমে না ঠিকই কিন্তু দূরত্ব অতিক্রম করার সাথে সাথে স্পেসের প্রসারণের ফলে লেজারের আলো দুর্বল হবে এবং একসময় লেজারের আলো দেখা যাবে না অর্থাৎ
লেজার থেকে নির্গত ভিজিবল লাইট স্পেসের প্রসারণের ফলে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বেড়ে গিয়ে ইনফ্রারেড লাইটে পরিণত হবে এরপর মাইক্রোওয়েভ এবং এরপর রেডিও ওয়েভে পরিণত হবে এভাবে দূরত্ব বাড়ার সাথে সাথে একসময় লেজারের আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য এতটাই বাড়বে যে তা আর দেখা যাবে না অর্থাৎ মানুষের দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যাবে এখন এই বিষয়টি বড় স্কেলে চিন্তা করুন আমরা আমাদের চারপাশের কতটা দূরের বস্তু দেখতে পাবো তার একটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে কারণ যথেষ্ট দূরে কোন একটি বস্তু থাকলে তা থেকে আলো নির্গত হলেও সেই আলো পৃথিবী পর্যন্ত আসতে আসতে এতটাই দুর্বল হয়ে যাবে যে তা আর পৃথিবী থেকে দেখা যাবে না এখন আলোর এই
সীমাবদ্ধতার ফলে আমরা যতটা দূরে পর্যন্ত দেখতে পাবো বা দেখতে পাই একেই বলা হচ্ছে অবজারভেবল ইউনিভার্স আমাদের অবজার্ভেবল ইউনিভার্সের ব্যাসার্ধ হচ্ছে 465 বিলিয়ন লাইট ইয়ার অর্থাৎ পৃথিবী থেকে 465 বিলিয়ন লাইট ইয়ার দূরে থাকা কোন একটি বস্তু থেকে নির্গত আলো পৃথিবীতে আসতে আসতে দুর্বল হয়ে আমাদের দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যায় তার মানে 465 বিলিয়ন লাইট ইয়ার দূরের বস্তু আমাদের পক্ষে দেখা সম্ভব নয় এখন এই অবজারভেবল ইউনিভার্সকে যদি আমরা মহাবিশ্ব কল্পনা করি তাহলে এই মহাবিশ্বের আপনি নিজেই হচ্ছেন কেন্দ্র অর্থাৎ আপনার অবস্থানের উপর নির্ভর করবে আপনি কতটা দূর পর্যন্ত দেখতে পাবেন আপনার অবস্থান পরিবর্তনের সাথে সাথে আপনার অবজারভেবল ইউনিভার্সও পরিবর্তন
হবে তার মানে আপনাকে কেন্দ্র করে আপনার অবজার্ভেবল ইউনিভার্স আবর্তিত হবে যেমন মনে করুন আপনি পৃথিবীতে অবস্থান করছেন তাহলে আপনার অবজারভেবল ইউনিভার্স হবে এইটুকু এই সীমারেখার বাইরের কোন কিছুই আপনি দেখতে পাবেন না এখন পৃথিবীর বাইরে অন্য কোন এক্সোপ্লানেটে যদি কোন প্রাণী থাকে তবে তাদের অবজারভেবল ইউনিভার্স হবে এটি তাহলে খেয়াল করুন আপনি যা দেখতে পাবেন এক্সোপ্লানেটের প্রাণী তার কিছুটা দেখতে পাবে এবং এর বাইরেও এমন কিছু সে দেখতে পাবে যা আবার আপনি দেখতে পাবেন না তার মানে প্রত্যেকের অবজারভেবল ইউনিভার্স তার অবস্থানের উপর নির্ভর করছে এখন পৃথিবীর মানুষ এবং এক্সোপ্লানেটের প্রাণী যদি তাদের অবজার্ভেবল ইউনিভার্সের বাইরে অবস্থান করে তবে
তারা পরস্পরকে কখনোই দেখতে পাবে না পৃথিবীর আকাশ থেকে যে গ্যালাক্সি গুলো দেখা যাবে এক্সোপ্লানেটের প্রাণীর আকাশে তার একটিও দেখা যাবে না একইভাবে এক্সোপ্লানেটের আকাশে যে গ্যালাক্সি গুলো দেখা যাবে তার একটিও পৃথিবীর আকাশে দেখা যাবে না সুতরাং অবজার্ভেবল ইউনিভার্সের বিবেচনায় আপনি নিজেই হচ্ছেন কেন্দ্র তাহলে এখানে খেয়াল করুন অবজার্ভেবল ইউনিভার্সের ক্ষেত্রে কোন স্পেসিফিক স্থানকে আপনি কেন্দ্র বলতে পারছেন না যা কেন্দ্র না থাকা সমতুল্য আমরা যখন বিগব্যাং কল্পনা করি তখন যা মাথায় আসে তা হচ্ছে একটি ইনফিনিটলি স্মল পয়েন্ট থেকে মহাবিশ্বের সূচনা হয়েছে তার মানে এই ইনফিনিটলি স্মল পয়েন্টটা যেখানে ছিল সেটাই হবে মহাবিশ্বের কেন্দ্র আপনার ধারণা ঠিক আছে
তবে এক্ষেত্রে কিছু কথা রয়েছে এবং সেটা কি তা বুঝতে একটি আতশবাজি বিবেচনা করা যাক বিগব্যাং যদিও কোন বিস্ফোরণ নয় তবে আতশবাজিকে অনেকটা বিগ ব্যাং এর সাথে তুলনা করা যেতে পারে আতশবাজির ক্ষেত্রে স্পেসের একটি পয়েন্টে বিস্ফোরণ ঘটে পরবর্তীতে আতশবাজিতে থাকা ম্যাটেরিয়াল চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়া বস্তুগুলোকে যদি সময়ের পেছনে নেয়া যায় তাহলে আমরা আতশবাজির বিস্ফোরণ কোথায় ঘটেছে সেই স্থানটি পাবো অর্থাৎ আতশবাজি বিস্ফোরণের কেন্দ্রে পৌঁছে যাব এখনই একইভাবে আমরা যদি মহাবিশ্বের পেছনের সময়ে যেতে থাকি তাহলে বিগব্যাং ঘটার স্থান বা ইনফিনিটলি স্মল পয়েন্টই পাওয়া যাবে এবং সেটাই হবে মহাবিশ্বের কেন্দ্র কিন্তু আতশবাজি এবং বিগব্যাং এর তুলনার
ক্ষেত্রে মূল পার্থক্য হচ্ছে আতশবাজি স্পেসের কোন একটি পয়েন্টে সংঘটিত হয়েছে বা হয় কিন্তু অন্যদিকে বিগব্যাং এর আগে স্পেস ছিল না সময়ও ছিল না বিগব্যাং এর মাধ্যমে স্পেস টাইমের সূচনা হয়েছে এখন বিগব্যাং এর আগে যেহেতু স্পেসই ছিল না তাহলে কোথায় বিগব্যাং সংঘটিত হয়েছে তা কি করে বের করা সম্ভব আসলে এক্ষেত্রে বিষয়টি হচ্ছে মহাবিশ্বের সকল স্থানে বিগব্যাং সংঘটিত হয়েছিল এখন এই বিষয়টি কেমন তা আরেকটু সহজ করে বুঝতে এই কাঠামোটিকে মনে করি বর্তমান মহাবিশ্ব এবং এই মহাবিশ্বের স্পেস গুলোতে অনেকগুলো পয়েন্ট বিবেচনা করি বর্তমানে এই পয়েন্ট গুলোর মধ্যে দূরত্ব রয়েছে এখন সময়ের পেছনে গেলে মহাবিশ্ব সংকুচিত হবে অর্থাৎ পয়েন্টগুলোর
মধ্যবর্তী দূরত্ব কমে আসবে এভাবে বিগব্যাং এর সময়ে গেলে দেখা যাবে পয়েন্টগুলোর দূরত্ব একদম শূন্যের কাছাকাছি চলে আসছে অর্থাৎ মহাবিশ্বের সকল স্পেস একটি বিন্দুতে চলে আসছে তার মানে এই পয়েন্টে বিগব্যাং হওয়া মানে মহাবিশ্বের সকল স্পেসে একই সাথে বিগব্যাং হওয়া এবং এইজন্যই বিগব্যাং এর ক্ষেত্রে মহাবিশ্বের সকল স্পেসকেই মহাবিশ্বের কেন্দ্র বিবেচনা করা যেতে পারে যা আসলে কেন্দ্র না থাকা সমতুল্য বিগব্যাং সংক্রান্ত আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন বিগব্যাং এর পরবর্তী সময়ে মহাজাগতিক বস্তুগুলো পরস্পর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং এই বিষয়টি বোঝানোর জন্য আমরা বেলুনের উদাহরণ ব্যবহার করে থাকি বেলুনের গায়ে কিছু ডট একে এগুলোকে গ্যালাক্সি বিবেচনা করা যাক এখন
বেলুন ফুলানোর ক্ষেত্রে দেখা যাবে প্রত্যেকটি ডট পরস্পর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ঠিক একইভাবে প্রত্যেকটি মহাজাগতিক বস্তু পরস্পর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে তবে এই উদাহরণের ক্ষেত্রে দুইটি বিষয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন প্রথমত বেলুন ফুলানোর সাথে সাথে ডট বা গ্যালাক্সি গুলো বড় হচ্ছে কিন্তু বাস্তবে এমনটা ঘটে না কারণ স্থানীয়ভাবে স্পেসের প্রসারণের বিপরীতে গ্রাভিটি শক্তিশালী এবং এই গ্রাভিটির কারণে গ্যালাক্সি গুলো তার শেপ ধরে রাখবে বেলুনের ডটের মতো বড় হবে না দ্বিতীয়ত এটি একটি দ্বিমাত্রিক উদাহরণ অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বেলুনের উপরের পৃষ্ঠ বিবেচনা করতে হবে যা একটি দ্বিমাত্রিক বিষয় এই দ্বিমাত্রিক সারফেসের ক্ষেত্রে আপনি বেলুনের পৃষ্ঠ থেকে হাঁটতে শুরু করলে
আবার সে আগের পয়েন্টে চলে আসবেন যা মহাবিশ্বের শেপ গোলাকার নির্দেশ করবে তবে বাস্তবে মহাবিশ্বের শেপ আসলে কেমন তা আমরা জানিনা বেলুনের এই বিষয়গুলো বলার কারণ হচ্ছে বেলুনের উদাহরণের ক্ষেত্রে আপনি মনে করতে পারেন বেলুনের ভেতরে থাকা পয়েন্ট হবে মহাবিশ্বের কেন্দ্র অনেকটা গোলকের কেন্দ্রের মতো কিন্তু বেলুনের উদাহরণ যেহেতু একটি দ্বিমাত্রিক উদাহরণ সেহেতু বেলুনের ভেতরের পয়েন্ট বিবেচনা করার সুযোগ নেই কারণ বেলুনের উদাহরণের ক্ষেত্রে বেলুনের সারফেস ছাড়া অন্য স্পেসের অস্তিত্ব নেই যার ফলে আপনি বেলুনের ভেতরের পয়েন্ট বা স্পেস কে বিবেচনা করতে পারবেন না এখন ঘুরে ফিরে সে একই কথা বিগব্যাং এর আগে যেহেতু স্পেস বলতে কিছু ছিল না সেহেতু
মানব মস্তিষ্কের জন্য স্পেস ইন কোথাও একটি ঘটনা সংঘটিত হয়েছে এই বিষয়টি কল্পনা করা খুবই কঠিন বিষয় আমাদের সোলার সিস্টেমের কেন্দ্র কোথায় এমন প্রশ্নের উত্তর খুবই সহজ সোলার সিস্টেমের কেন্দ্র হচ্ছে সূর্য এর কারণ গ্রহগুলো সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে এখন কে কাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হবে এটা নির্ভর করে ভরের উপর কোন একটি সিস্টেমের ভরকেন্দ্র যে বিন্দুতে থাকবে ওই সিস্টেমের বস্তুগুলো সেই বিন্দুকে কেন্দ্র করে ঘুরবে যাকে বলা হয় ব্যারি সেন্টার আমাদের সোলার সিস্টেমের ব্যারি সেন্টার সময়ের ব্যবধানে সূর্যের অভ্যন্তরে আবার সূর্যের বাইরে অবস্থান করতে পারে এ সম্পর্কে অবশ্য আমার একটি বিস্তারিত ভিডিও রয়েছে লিংক ভিডিও ডেসক্রিপশনে দেয়া থাকবে
যাই হোক এবার ভরকেন্দ্রের বিষয় বা কে কাকে কেন্দ্র করে ঘুরবে এই বিষয়টি বড় স্কেলে চিন্তা করা যাক আমাদের মিল্কিয়ে গ্যালাক্সি দেখতে বৃত্তাকার এবং এর কেন্দ্রে রয়েছে একটি ব্ল্যাক হোল যার নাম সেটেরিয়াস এ এবং এই ব্ল্যাক হোলই মিল্কিয়ে গ্যালাক্সির বেরি সেন্টারের অবস্থান যার ফলে মিল্কিয়ে গ্যালাক্সিতে থাকা দশ হাজার কোটি সূর্য এই ব্ল্যাক হোল কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের সৌরমণ্ডল কিংবা মিল্কিয়ে গ্যালাক্সির মত কি ইউনিভার্সের এমন কোন ভরকেন্দ্র রয়েছে যাকে কেন্দ্র করে সবকিছু আবর্তিত হচ্ছে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে মহাবিশ্বের স্ট্রাকচার কেমন সেটা বুঝতে হবে আমাদের কসমিক অ্যাড্রেস হচ্ছে আর্থ সোলার সিস্টেম অরিয়ন আর্ম
মিলকিউ গ্যালাক্সি লোকাল গ্রুপ ভার্গো সুপার ক্লাস্টার লানিয়াকা সুপার ক্লাস্টার ইউনিভার্স এখন এই বিশাল স্ট্রাকচার কে একসাথে দেখলে মনে হবে জালের মতো যাকে বলা হয় কসমিক ওয়েব এখন এই স্ট্রাকচারে এমন কোন স্থান নেই যেখানে বিশাল ভর কেন্দ্রভবত রয়েছে যাকে ভরকেন্দ্র বলা যেতে পারে অর্থাৎ মহাবিশ্বের যেকোনো একটি অংশ বিবেচনা করলে এর গড় ভর সবসময় একই পাওয়া যায় বিষয়টি আরেকটু ভালোভাবে বুঝতে ইউনিভার্সকে ফোমের সাথে তুলনা করতে পারেন এখন ফোমের ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে ভরের তারতম্য থাকলেও ফোমের একক আয়তনের ভর সবসময় সমান থাকবে অর্থাৎ ফোমটিকে কয়েকটি সমান সাইজের টুকরো করলে প্রত্যেকটি টুকরোর ভর প্রায় সমান হবে ঠিক এই একই বিষয় মহাবিশ্বের
ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য মহাবিশ্বের স্থানীয়ভাবে অর্থাৎ গ্যালাক্সি স্টার এগুলোতে ভর পুঞ্জিভূত থাকলেও কসমিক ওয়েবে এমন কোন পুঞ্জিভূত ভর বেশি স্থান নেই অর্থাৎ অনেকগুলো একক সাইজের কসমিক ওয়েব বিবেচনা করলে প্রত্যেকটির ভর প্রায় সমান হবে এখন মহাবিশ্বের ক্ষেত্রে যেহেতু ভরকেন্দ্র পাওয়া যাচ্ছে না সুতরাং মহাবিশ্বের কোন কেন্দ্র নেই এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে এত বিশাল একটি বিষয় মহাবিশ্ব এর কোন কেন্দ্র থাকবে না মহাবিশ্বের শেপ কেমন তা জানলেই তো এর কেন্দ্র কোথায় তা বলা যায় আসলে মহাবিশ্ব কতটা বিশাল তা আমরা জানিনা আপাতত মনে হচ্ছে মহাবিশ্ব অসীম হতে পারে এখন অসীম একটি কাঠামোর কেন্দ্র আপনি কিভাবে নির্ণয় করবেন এর বাইরে মহাবিশ্ব
যদি অসীম না হয়ে থাকে তবে এর শেপ কেমন এটা জানা প্রয়োজন কিন্তু সেটা জানা সহজ কাজ হবে না মনে করুন আপনাকে ঢাকা শহরের কোন একটি বিল্ডিং এর একটি রুমে রাখা হয়েছে এবং এই রুম থেকে বিল্ডিং এর শেপ কেমন তা বলতে বলা হলো এখন আপনি কি বিল্ডিং এর শেপ বলতে পারবেন আপনি নিশ্চিতভাবে বিল্ডিং এর শেপ না বলতে পারলেও আপনার রুমের জানালা দিয়ে যতটুকু দেখা যায় বা আপনার রুমে যতটুকু রিসোর্স রয়েছে এগুলোকে কাজে লাগিয়ে আপনি বিল্ডিং এর শেপ কেমন তা বোঝার চেষ্টা করতে পারেন মহাবিশ্বে আমাদের অবস্থান ঠিক একই মহাবিশ্বের ভেতরে অবস্থান করে এর শেপ জানা সহজ কাজ
হবে না ফলে আমাদের অবস্থান থেকে যতটা রিসোর্স আছে এর মাধ্যমে আমরা মহাবিশ্বের শেপ কেমন তা জানার চেষ্টা করছি বাংলাদেশের সবচেয়ে কমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটি হচ্ছে বন্যা ইদানিং প্রায় প্রতিবছরই বন্যা হতে দেখা যায় যার একটি বড় অংশ হচ্ছে ফ্লাশ ফ্লাট বা আকস্মিক বন্যা এর বাইরেও আরো বিভিন্ন ধরনের বন্যা রয়েছে এখন প্রশ্ন হচ্ছে বন্যা কি কারণে সংঘটিত হয় বন্যার ধরণ কি কি বন্যা সম্পৃক্ত এমন বিভিন্ন বিষয় বিস্তারিত জানতে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন ভিডিও ভালো লাগলে বিজ্ঞান পাইসি পরিবারে যুক্ত হয়ে সাথে থাকতে পারেন