16ই ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস এই দিনেই তৎকালীন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি বাহিনী কিন্তু বিজয়ের 53 বছর পরও একটা প্রশ্ন রয়েই যায় সেই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে কেন উপস্থিত ছিলেন না মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানী কেনই বা লেফটেনেন্ট জেনারেল নিয়াজির সাথে আত্মসমর্পণের দলিলে ভারতীয় বাহিনীর কমান্ডার লেফটেনেন্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা স্বাক্ষর করেন তার মানে কি বিজয় প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশের আধিপত্য বিস্তারের পরিকল্পনা ছিল ভারতের মোহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানীর জন্ম 1918 সালের পয়লা সেপ্টেম্বর বর্তমান সিলেটে 1940 সালের 5 অক্টোবর তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সেকেন্ড লেফটেনেন্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের সময় তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চলে
আসেন এবং কর্নেল পদে থাকাকালীন 1967 সালের 16 ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন কিন্তু 1971 সালের 25শে মার্চ গণহত্যার পর প্রবাসী সরকার গঠন করা হলে কর্নেল কে আবারো সেনাবাহিনীতে ফিরিয়ে আনা হয় এবং তাকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক করা হয় পরবর্তীতে স্বাধীনতার পর তাকে জেনারেল পদে পদোন্নতি দেয়া হয় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অনেক সেনা অফিসারের মতে জেনারেল ওসমানী ছিলেন একজন বিচক্ষণ সেনা কর্মকর্তা তিনি অনেক রাজনৈতিক বিষয়ে খুব বিচক্ষণতার সাথে বুঝতে পারতেন মেজর ডালিমের আমি মেজর ডালিম বলছি বইতে উঠে আসে কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই ভারতীয় সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থা রয় এর হস্তক্ষেপ ছিল দেশের রাজনীতিতে তারা আওয়ামী লীগের মধ্যকার দলীয় কোন দল কলকাতায়
উচ্ছাবিলাসী নেতাদের বেপরা জীবনযাপন ইত্যাদি বিষয়ে সুযোগ নিচ্ছিল জেনারেল ওসমানী এসব কিছুই জানতেন তার কমান্ডে যুদ্ধ করা অনেক সেনা কর্মকর্তা বলেন জেনারেল ওসমানীর সাথে মুজিবনগর সরকারের অনেক বিষয়ে মতের অমিল ছিল কিন্তু তবুও তিনি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে [মিউজিক] গেছেন 1971 সালের 16 ডিসেম্বর যখন পাকিস্তান বাহিনী আত্মসমর্পণ করে তখন সেই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে দলিলের স্বাক্ষর করার কথা ছিল জেনারেল ওসমানীর কিন্তু স্বাক্ষর তো দূরের কথা তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না তার পরিবর্তে বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন তার সেকেন্ড ইন কমান্ড গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার কিন্তু তার উপস্থিতিটাও ছিল নামমাত্র এক কোনায় দাঁড়িয়েছিলেন তিনি অনেক বিশ্লেষকের মতে
এমন করার প্রধান কারণ ছিল এই পুরো যুদ্ধটাকে ভারতের নিজেদের দাবি করা যার প্রমাণ পাওয়া যায় আত্মসমর্পণের দলিলেও আত্মসমর্পণের দলিলে মোট তিনটি অনুচ্ছেদ ছিল যার প্রথমটিতে লেখা ছিল পাকিস্তানি বাহিনী ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে যদিও লেখার কথা ছিল মুক্তিবাহিনী বা মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে বলা হয় দলিলের স্বাক্ষর করা মাত্র পাকিস্তানি ইস্টার্ন কমান্ড লেফটেনেন্ট জেনারেল জগজিত সিং অরোরার আওতায় চলে আসবে যদিও উচিত ছিল যৌথবাহিনীর আওতায় বা মুক্তিবাহিনীর আওতায় চলে আসা অর্থাৎ বুঝাই যাচ্ছে এই আত্মসমর্পণের দলিল একতরফা ভাবে ভারত নিজেদের পক্ষে লেখে এছাড়াও পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় ভারতীয় সিনেমা বা রাজনৈতিক বক্তব্যে দাবি করা হয় 1971
সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের ফলে জন্ম নেয় বাংলাদেশ যার প্রমাণ আবারো পাওয়া যায় আজ সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টে পোস্টে তিনি লেখেন 16 ডিসেম্বর দিনটি ভারতের জন্য এক অসাধারণ বিজয়ের দিন শুধু ভারত না গত 16 বছরে বাংলাদেশের ভেতরেই মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস প্রচন্ড রকমের বিকৃত করা হয়েছে পুরো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শুধুমাত্র একটি দল ও একজন মানুষকে কেন্দ্র করে করা হয়েছে তারই ধারাবাহিকতায় জেনারেল ওসমানীর অনুপস্থিতি নিয়ে একটি বিশ্লেষণও দাঁড় করানো হয় তাতে বলা হয় যেহেতু পাকিস্তান বাহিনীর পক্ষে তাদের সেনাপ্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া খান এবং ভারতীয় বাহিনীর পক্ষে তাদের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল শ্যাম মানিক সহ উপস্থিত ছিলেন
না তাই প্রোটোকল অনুযায়ী জেনারেল ওসমানীও উপস্থিত ছিলেন না কিন্তু আসলেও কি তাই এছাড়াও বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ নেতারা জেনারেল ওসমানী সম্পর্কে অসম্মানক বক্তব্য বক্তব্য দেন এখানে দেখেন জেনারেল উসমানী জেনারেল উসমানী আসলো কখন মুক্তিযুদ্ধের পরে এবং যখন সারেন্ডার করলো উচিত ছিল উসমানী সাহেব এসে এখানে সারেন্ডারে উপস্থিত থাকা কিন্তু উনি আসলো পরে কোনদিন যুদ্ধক্ষেত্রে যায় নাই একটা গুলি গুলি করা নাই আর আমাদের মত আমরা সাহস করে যে ভিতরে ঢুকছি তাও করে নাই কিন্তু তারা বিরুদ্ধ হয়ে গেছে সবাই বীরবি হয়ে গেছে সবাই এজ করছে এটা ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী সহ অনেকেই বলেন সেদিন জেনারেল ওসমানী সিলেটে ছিলেন এবং তিনি
একটি হেলিকপ্টার করে রওনা হয়েছিলেন ঢাকার উদ্দেশ্যে তার সাথে একই হেলিকপ্টারে ছিলেন ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী কিন্তু ভূমি থেকে সেই হেলিকপ্টারে গুলি করা হয় এবং সেটি একটি মাঠে জরুরি অবতরণ করে তাই জেনারেল ওসমানীর আর ঢাকায় আসা হয়নি যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে হেলিকপ্টারে গুলি লাগাটা কোন অস্বাভাবিক বিষয় না কিন্তু বিজয়ের দুইদিন আগে অর্থাৎ 14 ডিসেম্বর সিলেট শত্রুমুক্ত হয় সিলেটের মত এক মুক্তাঞ্চলে বিজয়ের ঘোষণা আসার পরে ঠিক কারা জেনারেল ওসমানের হেলিকপ্টার কে লক্ষ্য করে গুলি ছড়েছিল তা এখনো পরিষ্কার [মিউজিক] না জেনারেল ওসমানী মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ছিলেন তিনি সারাজীবন কাজ করে গেছেন দেশের মানুষের কল্যাণে এমনকি মৃত্যুর আগে তিনি তার মোট সম্পদের
চার ভাগের তিন ভাগই বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈন্যদের সাহায্যের জন্য দিয়ে যান আর বাকি টাকা সিলেটের কল্যাণের জন্য অথচ তাকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে বারবার জেনারেল ওসমানী হয়তো ভারতের আধিপত্য বিস্তার ও মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের দাবি করার পরিকল্পনা সম্পর্কে আগে থেকেই জানতেন আর সেজন্যই তাকে মহান বিজয়ের মুহূর্তের সাক্ষী করা হয়নি হয়তো অদূর ভবিষ্যতে বেরিয়ে আসবে আসল ইতিহাস ইমরান মাহমুদ বাংলাভিশন [মিউজিক]